Sunday, July 14, 2013

বৃষ্টি


বৃষ্টির মানে খুঁজে নিতে
জমালেম পাড়ি একদিন-
দূরদিগন্তে ঐ পাথরের দেশে ,
কুলুকুলু বেগ ঝরনা  যেথায়
আপন খেয়ালে নিত নেচে চলে
চপল চরণ মেঘবালিকার বেশে ।

ধূলি ধূসরিত পথে চলিবারে
মিলিলেম একবার -
নীড় ছাড়া কিছু পাখিদের সনে ,
চাতক সেথায় কহিল আমারে
বৃষ্টি,সেতো পিপাসার জল-
বক্ষে মোর যে শান্তি সুধা আনে ।

সেই কথাগুলি বুকে গেঁথে নিয়ে
চলিতে ছিলেম একাকী পথিক-
সাথে নিয়ে গান কোনো ,
পথের দুপাশে সবুজের ক্ষেত
সমীরণ সাথে খেলিবার ছলে
দিল ডাক,শোনো বন্ধু শোনো ।

বাতাসের সাথে ছন্দ মিলায়ে
ভরা ক্ষেতে তোলে ঢেউ-
নবজন্মের শত ধানেদের শিষ ,
কহিল সবাই এক প্রাণ হয়ে
শত কণ্ঠে এক সুর লয়ে
বৃষ্টি মোদের জীবন আশিষ ।

সারাদিন পথে হঁটিলেম কতো-
তপ্ত তপনে শ্রান্ত এক মন
বসিলেম এসে নদীটির পাশে ,
লাবন্যে ভরা এই জলদেহ
বৃষ্টির ছোঁয়া তার সব খানে
কহিল সে নদী পথিক সকাশে ।

দিবা শেষে যবে রবি অস্তগামী
লালিমা তাহার সারা গায় মেখে-
আসিলেম সেই পাথরের পদতলে ,
ঝরনা প্রিয়ার ছবি আঁকি পটে
যাহার মন রঞ্জনী দিয়ে নিত
কহিল পাথর,তারেই বুঝি বৃষ্টি সবে বলে ।

এইরূপে পথে ফিরিলেম যতো
মিলিলেম ততো কতো জনে-
জীবনের সেই নদীটির তীরে ,
অবশেষে মন করিল জ্ঞাপন
বৃষ্টির মানে খুঁজে পাবে ঠিক
তোমার প্রিয়ার সজল নয়ন নীরে ।

Sunday, March 10, 2013

গ্রাম

শহরের ধূসর রুক্ষতা ছেড়ে,
দিয়েছিলেম পাড়ি একদিন-
সবুজ বনানীর ওই গ্রামটির মাঝে,
সকালে সন্ধ্যায় প্রতিদিন যেথা
কীর্তন গান আর আজানের সুর
আজও একই সাথে বাজে।

আঁকাবাঁকা চলে ছোটো নদীখানি
সুমধুর এক কূলকুল সুরে,
নিকানো উঠানে ধানের মরাই
আলপনা আঁকা মাটির কুটীরে।

সকালের রোদ গায়ে মেখে নেয়
ঘোমটায় মোড়া বধূটির বাস,
ছেলেটি তাহার খেলে অঙ্গনে
সারাগায়ে মেখে মাটি একরাশ।

গাঁয়ের রাখাল ধূলিমাখা পথে
ধেনুদের সাথে যায়-
বাঁশের বাঁশিতে আনমনা করা
মাঠুরিয়া সুর গায়।

সবুজ আভায় চারদিক রাঙা-
ধানের শিষে মৃদু হাওয়া দোলে,
পাখীর কূজনে মাতোয়ারা মন
শান্ত হৃদয় হতাশার তান ভোলে।

মনের আশীষে মৃদু সমীরণ
যেন গুনগুন সুরে গায়,
মধূপ সকল ফুল থেকে ফুলে
পরাগের সাথে পরাগ মিলায়।

সারাটি দিবস ধূলিমাখা পথে
দেখিলেম কতো জীবনের পালাগান,
অস্তের রবি লালিমা কাজলে
রাঙিয়ে নিলেম এই তৃষিত পরান।

সবুজ বাতাসে বুক ভরে নিয়ে
নীড়ে আসা পাখীদের দল-
কহিল সুজন, ঘরে ফের এইবেলা,
মনের গভীরে আশা অফুরান
ফিরিব আবার গ্রামটির বুকে
মিটাতে সকল দগ্ধ জীবনজ্বালা।